বৈদ্যুতিক গাড়ি ভবিষ্যত কিনা তা এখনো ঠিক জানা যায়নি। তবে টেসলার সৌজন্যে প্রায় সারাবিশ্বেই বৈদ্যুতিক গাড়ির বিপ্লব ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতে এই বিপ্লবের ভার একপ্রকার টাটা মোটরসই টেনেছে। কিন্তু একইসাথে ভারত জ্বালানিবিহীন আরেক জ্বালানি নিয়ে কাজ চালাচ্ছে। আর এটা হতে পারে আগামী সময়ের পথ প্রবর্তক।
বর্তমানে পেট্রোল/ ডিজেলের পরিবর্তে গাড়িতে শক্তি উৎপাদনের জন্য মূলত বিদ্যুৎ এবং হাইড্রোজেন ফুয়েলের ওপর গবেষণা চালাচ্ছে নানান দেশের বিভিন্ন কোম্পানি। ভারতে এসবের সাথে আবার যোগ হয়েছে যুগান্তকারী ইথানল। খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গডকরি এই বিষয়ের ওপর নিজের সজাগ দৃষ্টি প্রতিবদ্ধ করে রেখেছেন। মঙ্গলবার ইথানল চালিত গাড়ি চালু করে সারাবিশ্বের সংবাদ শিরোনামে আসেন তিনি।
জাপানিজ গাড়ি নির্মাতা সংস্থা টয়োটা গাড়িটি এনেছে। টয়োটা ইনোভা হাইক্রসের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হচ্ছে গাড়িটিকে। আর এই ফ্লেক্স ফুয়েল গাড়ির উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রী নীতিন গড়করি। হাইব্রিড গাড়িটি চলবে 100 শতাংশ ইথানলের ওপর ভিত্তি করে। যা পুরোপুরি দূষণ মুক্ত। এছাড়া গাড়িটি পেট্রোলিয়াম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং দূষণ কমাতেও সাহায্য করবে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করি বলেন, “এই টয়োটা গাড়িটি 100 শতাংশ বায়ো-ইথানল জ্বালানিতে চলবে। আর এই জ্বালানি ব্যবহার করেই শক্তিশালী হাইব্রিড সিস্টেমের জন্য 40 শতাংশ শক্তি উৎপাদন করতে পারবে ইঞ্জিনটি।” এছাড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এও বলেন যে, ইথানলের দাম প্রতি লিটারে 60 টাকা এবং গাড়িটি 15 থেকে 20 কিমি/লিটার মাইলেজ দিতে পারে। ফলে দীর্ঘ যাতায়াতের ক্ষেত্রে পেট্রোলের তুলনায় অনেক সস্তা হবে এই ফ্লেক্স ফুয়েল।
জৈব জ্বালানী প্রচারের জন্য 2022 সালের শুরুতে কেন্দ্রীয় সরকার এবং টয়োটার মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। সেখানে থেকে এমন খবরও আসছে যে, মারুতি সুজুকিও ফ্লেক্স-ফুয়েল গাড়ি আনতে পারে। কারণ Maruti Suzuki আগের বছরই Wagon R প্রোটোটাইপ প্রদর্শন করেছে, যা 85 শতাংশ ইথানল মিশ্রণে চলতে পারে।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই পেট্রোলের মধ্যে 20% ইথানল মেশানো হয়েছে। E20 জ্বালানি চলছে দেশের অন্দরে। আগামী সময়ে পেট্রোল জাতীয় জ্বালানির পরিবর্তে 100% Ethanol অর্থাৎ E100 এ গাড়ি চালানোর জন্যই আনা হয়েছে ফ্লেক্স ফুয়েল। এর ফলে যে কেবল পরিবেশই সুরক্ষিত থাকবে তাই না, সাথে ভারত প্রতিবছর যে 200 বিলিয়ন ডলার খরচ করে পেট্রোলিয়াম কেনার জন্য সেই বৃহৎ অর্থরাশিও থাকবে দেশের অন্দরেই। এরফলে ভারতের আমজনতা আরো বেশি সুবিধা পাবে।