সাল ২০১৯ এ টয়োটো এবং জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (JAXA) একটি হাইড্রোজেন চালিত মুন রোভার ডেভেলপ করার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। নামিদামী সংস্থাটি এই যানটির নাম দিয়েছে ‘লুনার ক্রুজার’। এই প্রেসারাইজড রোভারটি মহাকাশচারীদের চাঁদ অথবা মঙ্গল গ্রহে বেঁচে থাকতে এবং সেখানকার ভূপৃষ্ঠ খনন করতে সাহায্য করবে। উল্লেখ্য, টয়োটা এই চন্দ্র ক্রুজারে রিজেনারেটিং ফুয়েল টেকনোলজিল ব্যবহার করছে, যা এটিকে আরও বিশেষ করে তুলেছে।
সূত্রের খবর, টয়োটা এই রোভারের জন্য জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির (JAXA) সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। একথা বলাই বাহুল্য যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিনের পাশাপাশি জাপানও মহাকাশে তার দখলদারি বাড়াচ্ছে। চাঁদে পা রাখার প্রায় 50 বছর পর মার্কিন মুলুক অর্টেমিস নামে আরেকটি চন্দ্রাভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর এই সফরে জাপানও তার মহাকাশচারীদের পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। পাশাপাশি JAXA-র মাধ্যমে আর্টেমিস মিশনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কাজ করছে।
এই মিশনের জন্য, টয়োটা এমন একটি মুন রোভার প্রস্তুত করছে যাতে নভোচারীদের ভিতরে স্পেস স্যুট পরতে হবে না। এখানে প্রায় 460 কিউবিক ফুট জায়গা থাকবে। উল্লেখ্য, এই মুন রোভারটি চাঁদের মেরু অঞ্চলগুলি অন্বেষণ করতে ব্যবহৃত হবে। প্রায় 10 টন ওজনের এই রোভারটিকে এমনভাবে তৈরি অরা হবে যাতে এটি সহজেই চাঁদের ধুলোবালি এবং তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মহাকাশ মিশনে পাঠানো রোভারগুলি সাধারণত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সোলার প্যানেল ব্যবহার করে। দিনের বেলা, তারা সূর্যালোক থেকে পাওয়া শক্তি দিয়ে ব্যাটারি চার্জ করে এবং রাতে, এই ব্যাটারিতে সঞ্চিত শক্তি চলাচল বা তাপমাত্রা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। বলে রাখি, চাঁদে একটি রাত পৃথিবীতে 14 দিনের সমান। সেক্ষেত্রে ব্যাটারি সঞ্চয় করে রাখা সত্যিই একটি চ্যালেঞ্জ। এমতাবস্থায় টয়োটোর দাবি, তারা একটি বিশেষ পদ্ধতিতে এই অসাধ্য সাধন করেছে।
পৃথিবীর জ্বালানি ব্যবহার করে, লুনার ক্রুজারের সীমা 6,200 মাইলেরও বেশি (প্রায় 9,977 কিলোমিটার) হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি তার বিষুব রেখায় চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার জন্য প্রায় যথেষ্ট। যদি মহাকাশচারীরা চাঁদ বা মঙ্গল থেকে আরও জ্বালানি পায় তবে তারা আরও দূরে যেতে পারবে। নাসার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, “একটি চাপযুক্ত রোভার মহাকাশচারীদের থাকার এবং কাজ করার জায়গা সরবরাহ করবে যাতে তারা চন্দ্র পৃষ্ঠে দীর্ঘমেয়াদী মিশন পরিচালনা করতে পারে।”
এই বিষয়ে, JAXA-এর প্রেসিডেন্ট হিরোশি ইয়ামাকাওয়া মার্চ 2019-এ বলেছিলেন যে, “একটি প্রেসারাইজড রোভার কেবিন এমন একটি উপাদান যা চন্দ্র পৃষ্ঠে অনুসন্ধান এবং ব্যবহারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।” লুনার ক্রুজারে টয়োটার সাম্প্রতিক আপডেট অনুযায়ী, এতে রিজেনারেটিং ফুয়েল টেকনোলজি ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই লুনার ক্রুজারের মিশন লাইফ 10 বছর হবে এবং এটি চাঁদে নভোচারীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য বছরে 42 দিনের বেশি কাজ করবে।