টাটা কোম্পনির গাড়ির কথা বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে একটা শক্তপোক্ত কাঠামো। এমন একটা কোম্পানি যে কোয়ালিটির সঙ্গে আপোষ করেনা। গ্রাহকদের সুবিধার্থে একাধিক গাড়ি লঞ্চ করেছে কোম্পানিটি। বিগত কয়েক দশকে টাটা তার যানবাহনকে আরও উন্নতমানের করে তুলতে একাধিক পরিবর্তন এনেছে। যে কারণে দেশ তো বটেই পাশাপাশি বিদেশের মাটিতেও রাজ করছে টাটার গাড়ি।
তবে এসবের মধ্যেই টাটার এমন একটি গাড়ি রয়েছে যা বিগত ২৫ বছর ধরে নিজের জায়গা ধরে রেখেছে। বলতে গেলে, ভারতীয়দের সাথে SUV-র পরিচয় ঘটিয়েছিল এই গাড়িটিই। আজ আমরা টাটা সাফারির কথা বলছি। এখনও পর্যন্ত কোম্পানিটি এর পাঁচটি জেনারেশন বাজারে লঞ্চ করেছে এবং সবগুলোই মানুষের কাছ থেকে অসাধারণ সাড়া পেয়েছে।
উল্লেখ্য, 1998 সালে অটো এক্সপোতে প্রথমবারের মতো সাফারির এক ঝলক দেখা গিয়েছিল। সেই সময় বাজারে আর কোন SUV ছিলনা। প্রথম জেনারেশনের 7 সিটার গাড়িটি আসত 2 লিটার ইঞ্জিন সহ। রীতিমত রেকর্ড গড়েছিল এই গাড়ি। এরপর দীর্ঘ 8 বছর পর্যন্ত এই গাড়িটিতে কোন পরিবর্তন আনা হয়নি।
এরপর 2007 সালে সাফারির দ্বিতীয় জেনারেশন চালু হয়। পূর্বের 2 লিটারের ইঞ্জিন বদলে 3 লিটারের DICOR ডিজেল ইঞ্জিন দেওয়া হয় এতে। বাকি সবকিছু পছন্দ হলেও গ্রাহকদের গাড়ির মাইলেজ নিয়ে সামান্য আপত্তি ছিল। কারণ সেই সময়কার অন্যান্য গাড়ির তুলনায় বেশি তেল খরচ হত এই গাড়িতে। এরপর দুই বছর পর আসে কোম্পানির নতুন মডেল। এতে দেওয়া হয় 2.2-লিটার DICOR ডিজেল ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিনের মাইলেজ দেখে খুশি হয়ে গেছিল সাধারণ মানুষজন।
এর ৫ বছর পর আবারও সাফারি বদল করে কোম্পানি। কোম্পানিটি 2012 সালে Safari Storme চালু করে। সাফারির ঐতিহ্যবাহী ডিজাইন থেকে সরে গিয়ে স্টর্মকে একটি বক্সী চেহারা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল সংস্থাটি। পাশাপাশি আরও একাধিক ফিচার্স জোড়া হয়েছিল এই নতুন সংস্করণে। তবে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসে 2015 সালে। কারণ ততদিনে বাজারে আরও অন্যান্য গাড়ি আসতে শুরু করে দিয়েছে, যারফলে টাটাকেও বদল আনতেই হত।
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সংস্থাটি সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করে দেয়। এরপর গাড়িটি তৈরি হয় আন্তর্জাতিক মানের। ডিজাইনের পাশাপাশি ইঞ্জিনেও সম্পূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে আসে কোম্পানিটি। Safari একটি 1956 cc টার্বোচার্জড ইঞ্জিন নিয়ে এসেছিল, যার বিশেষত্ব ছিল মাইলেজ। গাড়িটি প্রতি লিটারে 18 কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ দিয়েছে। এরপর সাফারির নতুন জেনারেশন-ও খুব শীঘ্রই আসছে। আশা করা হচ্ছে আসন্ন আগস্টেই ফেসলিফ্ট মডেল লঞ্চ করবে। উল্লেখ্য, গাড়িটির প্রারম্ভিক মূল্য 15.85 লক্ষ টাকা এক্স-শোরুম।